‘ঊন’, মানে ‘অসম্পূর্ণ’। সমার্থক শব্দ- দুর্বল বা কমজোর। সেই অর্থে ‘ঊনমানুষ’-এর অর্থ দাঁড়ায় ‘অসম্পূর্ণ বা দুর্বল মানুষ’। পৃথিবীতে কোনো মানুষই স্বয়ংসম্পূর্র্ণ নয়; হওয়া সম্ভবও নয়। কোথাও না-কোথাও, কোনো না-কোনো জায়গায় সে কমজোর। এটাই শাশ্বত। আর এই বাস্তবতাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে অঞ্জন আচার্যের ‘ঊনমানুষ’ গ্রন্থের প্রতিটি গল্প। গল্পের চরিত্রগুলো কোথায় যেন সীমান্তের কাছাকাছি গিয়েও স্পর্শ করতে পারে না সীমান্তরেখা। ঠিক যেন ঊনত্রিশ থেকে ঊননব্বইয়ের মতো। নামের শেষে পূর্ণ সংখ্যার উল্লেখ থাকলেও সেই সংখ্যার সমান নয়; একটু কম হয়ে থাকা। তবে গল্প-বয়ানে কেবল চরিত্রের বিশ্লেষণই নয়; আছে সমাজবাস্তবতার নানা নিবার্য-অনিবার্য দিক। আছে ব্যক্তি মানুষের ভেতরকার ষড়রিপুর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া; প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির কথা। ধরা ও অধরা আর স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গ যেন হাত ধরাধরি করে হাঁটে এইসব ঊনমানুষের জীবনের পথে। সংকলিত প্রতিটি গল্পই নিরীক্ষাধর্মী। গতানুগতিকের বাইরে একটু ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা। একই সঙ্গে প্রতিটি গল্পের আঙ্গিকও আলাদা। একটির সঙ্গে মিল নেই অন্যটির। তবুও গল্পগুলো পাঠ করতে গিয়ে মনে হলেও হতে পারে, এ যেন আমার, আপনার বা আমাদের আশপাশের চেনা-জানা মানুষেরই আখ্যান।